অতি কিশোরের ছড়া
কবি- সুকান্ত ভট্টাচার্য
তোমরা আমায় নিন্দে ক’রে দাও না যত গালি,
আমি কিন্তু মাখছি আমার গালেতে চুনকালি,
কোন কাজটাই পারি নাকো বলতে পারি ছড়া,
পাশের পড়া পড়ি না ছাই পড়ি ফেলের পড়া।
তেতো ওষুধ গিলি নাকো, মিষ্টি এবং টক
খাওয়ার দিকেই জেনো আমার চিরকালের সখ।
বাবা-দাদা সবার কাছেই গোঁয়ার এবং মন্দ,
ভালো হয়ে থাকার সঙ্গে লেগেই আছে দ্বন্দ্ব।
পড়তে ব’সে থাকে আমার পথের দিকে চোখ,
পথের চেয়ে পথের লোকের দিকেই বেশী ঝোঁক।
হুলের কেয়ার কি নাকো মধুর জন্যে ছুটি,
যেখানে ভিড় সেখানেতেই লাগাই চুটোছুটি।
পন্ডিত ও বিজ্ঞজনের দেখলে মাথা নাড়া,
ভাবি উপদেশের ষাঁড়ে করলে বুঝি তাড়া।
তাইতো ফিরি ভয়ে ভয়ে, দেখলে পরে তর্ক,
বুঝি কেবল গোময় সেটা, – নয়কো মধুপর্ক।
ভুল করি ভাই যখন তখন, শোধরাবার আহ্লাদে
খেয়ালমতো কাজ ক’রে যাই, কষ্ট পাই কি সাধে ?
সোজাসুজি যা হয় বুঝি, হায় অদৃষ্ট চক্র !
আমার কথা বোঝে না কেউ, পৃথিবীটা বক্র।।
আরও পড়ুন – মিঠেকড়া / সুকান্ত ভট্টাচার্য