পাখি
– বন্দে আলী মিয়া
খাঁচার দুয়ার আলগা পাইয়া উড়ে গেছে পাখি বনে,
ছোট কালো পাখি উড়ে গেছে দূর নীল নভ অঙ্গনে।
শূন্য খাঁচাটি অনাদরে হোথা পড়ে আছে এক ধারে,
খোকা বসি পাশে অশ্রুসজল চোক মোছে বারে বারে।
একদা খোকন দূর দেশে গিয়ে এনেছিল এক পাখি,
সারাদিন তারে করিত যতন সযতনে বুকে রাকি।
ছোট কালো পাখি কুচকুচে দেহ-রেশম পালক তার,
দুটি চোখে তার বনের স্বপন জাগে দূর পারাবার।
এত ভালোবাসা, এতযে সোহাগ, পোষ তবু মানে নাই,
খাঁচার প্রাচীরে পাখা ঝাপটিয়া, পথ খুঁজিয়াছে তাই ।
খোকা চায় পাখি – পাখি চায় বন-স্বাধীন মুক্ত প্রাণ,
কন্ঠে তাহার জাগে ক্ষণে ক্ষণে নীল আকাশের গান।
খোকা ভাবে মনে, এ পাখি তাহার-গান সে শোনায় তায়
জানে না তো কভু কান্না তাহার সুর হয়ে বাহিরায়।
গান শুনি তার মুগ্ধ হইয়া ভেবেছিল খোকা মনে-
পোষ মানিয়াছে, ভুলে গেছে বন – রবে সে তাহার সনে।
আদর করিয়া খাঁচার দুয়ার দিল একেবারে খুলি
মন কভু কারো বশ নাহি মানে, সে কথা গেল যে ভুলি।
সহসা পাখিটি কালে ডানা মেলি উড়ে গেল দূর দেশে,
তারি শোকে আজ খোকার নয়ন অশ্রুতে যায় ভেসে।