ভালখাবার
কবি- সুকান্ত ভট্টাচার্য
ধনপতি পাল, তিনি জমিদার মস্ত ;
সূর্য রাজ্যে তাঁর যায় নাকো অস্ত
তার ওপর ফুলে উঠে কারখানা-ব্যাঙ্কে
আয়তনে হারালেন মোটা কোলা ব্যাঙকে।
সবার “হুজুর” তিনি, সকলের কর্তা,
হাজার সেলাম পান দিনে গড়পরতা।
সদাই পাহারা দেয় বাইরে সেপাই তাঁর,
কাজ নেই, তাই শুধু ‘খাই-খাই’ বাই তাঁর।
এটা খান, সেটা খান, সব লাগে বিদ্ ঘুটে,
টান মেরে ফেলে দেন একটু খাবার খুঁটে ;
খাদ্যে অরুচি তাঁর, সব লাগে তিক্ত,
খাওয়া ফেলে ধমকান শেষে অতিরিক্ত।
দিনরাত চিৎকার : আরো বেশি টাকা চাই,
আরো কিছু তহবিলে জমা হয়ে থাকা চাই।
সব ভয়ে জড়োসড়ো, রোগ বড় প্যাঁচানো।
খাওয়া ফেলে দিন রাত টাকা ব’লে চ্যাঁচানো।
ডাক্তার কবিরাজ ফিরে গেল বাড়িতে ;
চিন্তা পাকালো জট নায়েবের দাড়িতে।
নায়েব অনেক ভেবে বলে হুজুরের প্রতি :
কী খাদ্য চাই ? কী সে খেতে উত্তম অতি ?
নায়েবের অনুরোধে ধনপতি চারিদিক
দেখে নিয়ে বার কয় হাসলেন ফিক্-ফিক্ ;
তারপর বললেন : বলা ভারি শক্ত,
সব চেয়ে ভালো খেতে গরীবের রক্ত।।
আরও পড়ুন – মিঠেকড়া / সুকান্ত ভট্টাচার্য